একজন টিপ ফস্টার
১৯৫৮ সালে নিজের অভিষেক সেঞ্চুরিকে ৩৬৫ রানে পরিণত করে গ্যারি সোবার্স দুটি রেকর্ড গড়েছিলেন। একটি রেকর্ড অনেকেরই জানা যে লেন হাটনের সর্বোচ্চ ৩৬৪ রানের ইনিংস টপকে টেস্টে সে সময়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সোবার্স। কিন্তু অন্যটি অনেকেরই জানা নয়। সেটি হলো, ১৯০৩ সালে সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টিপ ফস্টার তার অভিষেক টেস্টের অভিষেক সেঞ্চুরিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ২৮৭ রান পর্যন্ত। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে তার চাইতে বেশি রান করেননি কোনো ক্রিকেটার। প্রায় ৫৫ বছর পর নিজের প্রথম সেঞ্চুরিকে ৩৬৫ রানের ইনিংসে রূপান্তর করে সে রেকর্ডটি ভাঙেন গ্যারি সোবার্স। তবে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলার রেকর্ডটি এখনো টিপ ফস্টারের দখলে। ২৮৭ রানের সেই ইনিংস খেলার শতবর্ষ পেরিয়ে গেলেও সে রেকর্ডটি এখনো অক্ষত।
টিপ ফস্টারের অবশ্য এর চাইতেও অবিশ্বাস্য কীর্তি আছে। যে কীর্তির অংশীদার আর কখনো কোনো ক্রীড়াবিদ যে হবেন না সেটা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। ক্রিকেট আর ফুটবল, দুই খেলাতেই ইংল্যান্ড জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অবিশ্বাস্য কীর্তি আছে তার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের হয়ে ফস্টার খেলেন ৮ টি টেস্ট ম্যাচ। অধিনায়কত্ব করেন তিনটি টেস্ট ম্যাচে। আর ইংল্যান্ড ফুটবল দলের হয়ে ফস্টার ম্যাচ খেলেছেন ৫ টি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করে আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারের প্রথম গোল পান ফস্টার। ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলা টিপ ফস্টার ক্যারিয়ারে সর্বমোট গোল করেছেন ৩ টি। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে ১৯০২ সালে ওয়েলসের বিপক্ষে ইংল্যান্ড দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন টিপ ফস্টার।
অবিশ্বাস্য এই কীর্তি গড়া মানুষটি অবশ্য পৃথিবীতে খুব বেশি সময় থাকতে পারেননি। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পরলোকে পাড়ি জমান টিপ ফস্টার।
১৮৭৮ সালের আজকের এই দিনে(১৬ এপ্রিল) জন্মগ্রহণ করেছিলেন টিপ ফস্টার।
শুভ জন্মদিন মিস্টার ফস্টার। শতবর্ষ পেরিয়ে গেলেও অভিষেক টেস্ট ইনিংসে আপনার করা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি এখনো অক্ষত। কোনো এক শতাব্দীতে আপনার এই রেকর্ডটি কেউ ভাঙলে একজন টিপ ফস্টারের নাম নিশ্চয়ই সেদিন উচ্চারিত হবে অনেক শ্রদ্ধাভরে। আর ফুটবল, ক্রিকেট- দুই খেলার জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ার গল্প পড়ে একজন টিপ ফস্টারকে মনে রাখবে ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্রীড়ামোদীরা।
No comments