অ্যাশেজঃ ছাইয়ের গল্প, ছাইয়ের ইতিহাস- মাহবুব হাসান তন্ময়
ক্রিকেটের অন্যতম ঐতিহ্যময় একটি অধ্যায় হচ্ছে 'অ্যাশেজ'।
অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড এর মধ্যে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচের সিরিজকেই 'অ্যাশেজ' বলা হয়। অ্যাশেজকে বলা হয় ক্রিকেটের সবচেয়ে ঐতিহ্যময় ও প্রাচীন সিরিজ। এর পিছনে রয়েছে শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
ইংরেজি 'অ্যাশেজ' এর বাংলা অর্থ ‘ছাই’ বা ‘ভস্ম‘। ১৮৮২ সালের ঘটনা। সে বছরের ২৮ আগস্ট ইংল্যান্ড এর “ওভাল” এ তিন দিনের একটি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। টসে জিতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক ইংলিশ বোলারদের তোপের মুখে মাত্র ৬৩ রানেই অল-আউট হয়ে যায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ইংল্যান্ড ও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি প্রথম ইনিংসে, ১০১ রানে অল-আউট হয়ে সর্বসাকুল্যে ৩৮ রানের লিড পায় ইংলিশরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১২২ রানেই গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস। আর ইংলিশদের সামনে জয়ের জন্য ৮৫ রানের লক্ষ নির্ধারিত হয়। নিজেদের মাঠে নিজেদের দর্শকদের সামনে এই টার্গেট নিতান্তই সহজ ছিল ইংল্যান্ড এর জন্য। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে মাত্র ৭৭ রানে অল-আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। আর দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি ৮ রানে জিতে নেয় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। তিন দিনের ম্যাচটি দুই দিনেই শেষ হয়ে যায়।
ইংল্যান্ড এর এই অবিশ্বাস্য পরাজয়ে ইংলিশ গণমাধ্যমে তখন ইংলিশ ক্রিকেটের উপর রোষানল ছড়িয়ে পড়ে। তখন ইংল্যান্ডের সবচাইতে জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘দ্যা স্পোর্টিং টাইমস’ তাদের প্রতিবেদনে ইংরেজ ক্রিকেট সম্পর্কে লেখে-
“ইংলিশ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংলিশ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে প্রদান করেছে।”
“ইংলিশ ক্রিকেটকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে ওভালের ২৯ আগস্ট, ১৮৮২ তারিখটি। গভীর দুঃখের সাথে বন্ধুরা তা মেনে নিয়েছে। ইংলিশ ক্রিকেটকে ভস্মীভূত করা হয়েছে এবং ছাইগুলো অস্ট্রেলিয়াকে প্রদান করেছে।”
ইংরেজ গণমাধ্যমগুলো ১৮৮২-৮৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পরবর্তী ইংরেজ দলের সফরে "অ্যাশেজ পুণরুদ্ধারে যাত্রা শুরু ..." উল্লেখ করে। ঐ সফরে মেলবোর্নের একদল নারী ইংল্যান্ড অধিনায়ক আইভো ব্লাইকে ছোট্ট ভস্ম স্তুপাকারে প্রদান করে। পাত্রে রক্ষিত ছাই হিসেবে ক্রিকেটের অন্যতম উপকরণ বেইলের ভস্ম ছিল। এভাবেই বিখ্যাত অ্যাশেজ সিরিজের সূত্রপাত ঘটে যাতে কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট সিরিজই অন্তর্ভুক্ত থাকে। যে দল সিরিজ জয় করে তারা অ্যাশেজ ট্রফিটি লাভ করে। দুই দলের মধ্যকার টেস্ট সিরিজ নিয়ে গঠিত এ প্রতিযোগিতাটিকে ঘিরে অদ্যাবধি ক্রীড়া বিশ্বে ব্যাপক আগ্রহ-কৌতূহলের সৃষ্টি করে আসছে।
অ্যাশেজ পাত্রটিকে ভুলবশত কেউ কেউ অ্যাশেজ সিরিজের ট্রফি হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তবে, এটি কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু ব্লাই সর্বদাই এটিকে ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে বিবেচনা করতেন।প্রায়শই পাত্রের অনুলিপি বা রেপ্লিকাকে অ্যাশেজ সিরিজ বিজয়ের প্রতীক হিসেবে প্রদান করা হয়। কিন্তু এভাবে প্রকৃত পাত্রটিকে কখনো প্রদান কিংবা প্রদর্শন করা হয়নি। ব্লাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর বিধবা স্ত্রী লর্ডসে অবস্থিত এমসিসি’র যাদুঘরে প্রকৃত পাত্রটি দান করেন।
![]() |
Ashes |
১৮৮২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে প্রথম ‘অ্যাশেজ’ নামে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ লড়াই শুরু করে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ২-১ ব্যবধানে প্রথম ‘অ্যাশেজ’ নামে টেস্ট সিরিজটি জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় ইংলিশরা।
বর্তমান শর্টার ভার্সন ক্রিকেটের দুনিয়ায় অ্যাশেজের জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পড়েনি। বরং দিনদিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। বর্তমানেও অ্যাশেজ সিরিজ ক্রিকেটের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় সিরিজ। তবে অতীতের চেয়ে বর্তমানে অ্যাশেজের ফরমেটে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড এর মাটিতে পালাক্রমে ১৮ মাস ও ৩০ মাস পরপরএই সিরিজটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ৫ ম্যাচের এই সিরিজে জয়ী দলকে 'অ্যাশেজ' ট্রফি বা 'ভস্মাধার' প্রদান করা হয়। আর কোন কারণে সিরিজ ড্র হলে তার পূর্ববর্তী সিরিজের জয়ী দলটির কাছেই ট্রফিটি থেকে যায়।
অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড এর কাছে অ্যাশেজ শুধুমাত্র একটি ক্রিকেট সিরিজ নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে এই দুই দেশের ক্রিকেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জড়িয়ে আছে অনেক আনন্দ-বেদনার উপলক্ষ। আর এই মর্যাদার লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত সমতায় রয়েছে দুই দল। ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৭০ টি ‘অ্যাশেজ’ সিরিজে মুখোমুখি হয়েছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। দুই দেশের এই মর্যাদাপূর্ণ লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ৩৩ বার সিরিজ জিতেছে আর ইংল্যান্ড জিতেছে ৩২ বার। পাঁচটি সিরিজ অমীমাংসিত থাকে। ম্যাচ জেতার দিক দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় ১৩৪ টি আর ইংল্যান্ড এর জয় ১০৬ টি।
ব্যক্তিগত নৈপুণ্যঃ
★অ্যাশেজে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের কথা বলতে গেলে সবার আগে একজনের নামই চলে আসবে, স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান। ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানের মহিমায় ভাস্বর হয়ে আছে অ্যাশেজ সিরিজটি। অ্যাশেজে ৩৬ ম্যাচে অবিশ্বাস্য ৮৯.৭৮ গড়ে সর্বোচ্চ ৫০২৮ রান করেছেন ব্রাডম্যান। যার মধ্যে রয়েছে ১৯ টি শতক এবং ১২ টি অর্ধশতরানের ইনিংস। এক অ্যাশেজে সর্বোচ্চ রানের মালিকও স্যার ডন ব্রাডম্যান(৯৭৪ রান)। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ড এর ব্যাটসম্যান জ্যাক হবস। অ্যাশেজে ৪১ ম্যাচে ১২ টি শতক ও ১৫ টি অর্ধশতক রানের ইনিংস এর সাহায্যে ৫৪.২৬ গড়ে ৩৬৩৬ রান করেছেন জ্যাক হবস। ৪২ ম্যাচে ৩২২২ রান নিয়ে তালিকার ৩য় অবস্থানে রয়েছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক এল্যান বোর্ডার।
★অ্যাশেজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় এক নাম্বারে রয়েছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনার অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন। অ্যাশেজে ৩৬ ম্যাচে ১৯৫ টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৫ উইকেট নিয়েছেন ১১ বার। সেরা বোলিং ফিগার ৭১ রানে ৮ উইকেট। এই তালিকার ২য় অবস্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী পেসার গ্ল্যান ম্যাগ্রাথ। ৩০ ম্যাচে ১৫৭ টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন কিংবদন্তী ইংলিশ অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথাম। ৩২ ম্যাচে ১২৮ টি উইকেট লাভ করেন তিনি। এক অ্যাশেজে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী জিম লেকার (৪৪ উইকেট)।
অ্যাশেজের আলোচিত কয়েকটি ঘটনাঃ
★ শেন ওয়ার্নের 'বল অফ দ্যা সেঞ্চুরি' ঃ
১৯৯৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের ম্যাচে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।সেসময় অস্ট্রেলিয়া দলে 'শেন ওয়ার্ন' নামের এক আনকোরা লেগ স্পিনার সুযোগ পায়। টেস্টের ৩য় দিনে যখন ইংলিশ ওপেনার মাইক গ্যাটিং ব্যাটিং করছিলো তখন বোলিং এ আসেন শেন ওয়ার্ন। অ্যাশেজে নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই সবাইকে তাক লাগিয়ে বোল্ড আউট করে দেনমাইক গ্যাটিং কে। ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিংকে করা ওয়ার্নের বলটি লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়ে অবিশ্বাস্য বাক খেয়ে ষ্ট্যাম্প এ আঘাত হানে। ঘটনার আকস্মিকতায় ব্যাটসম্যান গ্যাটিং এতোটাই বিস্মিত হয়েছিলো যে বলটি সত্যিই স্ট্যাম্পে আঘাত হেনেছে কিনা তা জানতে তিনি আম্পায়ার এর শরণাপন্ন হন। শেন ওয়ার্নের সেই বলটি 'বল অফ দ্যা সেঞ্চুরি' বা 'শতাব্দীর সেরা বল' হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
১৯৯৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের ম্যাচে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।সেসময় অস্ট্রেলিয়া দলে 'শেন ওয়ার্ন' নামের এক আনকোরা লেগ স্পিনার সুযোগ পায়। টেস্টের ৩য় দিনে যখন ইংলিশ ওপেনার মাইক গ্যাটিং ব্যাটিং করছিলো তখন বোলিং এ আসেন শেন ওয়ার্ন। অ্যাশেজে নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই সবাইকে তাক লাগিয়ে বোল্ড আউট করে দেনমাইক গ্যাটিং কে। ডানহাতি ব্যাটসম্যান মাইক গ্যাটিংকে করা ওয়ার্নের বলটি লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়ে অবিশ্বাস্য বাক খেয়ে ষ্ট্যাম্প এ আঘাত হানে। ঘটনার আকস্মিকতায় ব্যাটসম্যান গ্যাটিং এতোটাই বিস্মিত হয়েছিলো যে বলটি সত্যিই স্ট্যাম্পে আঘাত হেনেছে কিনা তা জানতে তিনি আম্পায়ার এর শরণাপন্ন হন। শেন ওয়ার্নের সেই বলটি 'বল অফ দ্যা সেঞ্চুরি' বা 'শতাব্দীর সেরা বল' হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
★জিম লেকারের অবিশ্বাস্য কীর্তিঃ
১৯৫৬ সালের ৩১ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজের একটি টেস্টে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। সেই টেস্টে ইংলিশ অফস্পিনার জিম লেকার অবিশ্বাস্য এক কীর্তি করে বসেন। প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে একাই প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নেওয়ার অসামান্য গৌরব অর্জন করেন তিনি। সেই টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯০ রানের বিনিময়ে ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি যা এখন পর্যন্ত এক টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড হিসেবে অক্ষত রয়েছে।
১৯৫৬ সালের ৩১ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজের একটি টেস্টে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। সেই টেস্টে ইংলিশ অফস্পিনার জিম লেকার অবিশ্বাস্য এক কীর্তি করে বসেন। প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে একাই প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নেওয়ার অসামান্য গৌরব অর্জন করেন তিনি। সেই টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯০ রানের বিনিময়ে ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি যা এখন পর্যন্ত এক টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড হিসেবে অক্ষত রয়েছে।
★ব্রাডম্যান এর সেই বিখ্যাত 'শূন্য' ঃ
১৯৪৮ সালে ওভালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ব্যাটিং করতে নামেন স্যার ডন ব্রাডম্যান। ব্যাটিং এ নামার সময় তার গড় ছিল ৯৯.৯৬। মাত্র ৪ রান করতে পারলেই অবিশ্বাস্য ১০০ গড় নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারতেন তিনি। কিন্তু মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই ইংলিশ লেগস্পিনার এরিক হলিস এর বলে শূন্য রানে আউট হয়ে যান তিনি। যার ফলে ১০০ গড়ের জাদুকরী মাইলফলকটি আর স্পর্শ করা হয়নি সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান এর। ব্রাডম্যান এর এই 'শূন্য' কে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে অলোচিত শূন্য রানের ইনিংস হিসেবে অভিহিত করা হয়।
১৯৪৮ সালে ওভালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ব্যাটিং করতে নামেন স্যার ডন ব্রাডম্যান। ব্যাটিং এ নামার সময় তার গড় ছিল ৯৯.৯৬। মাত্র ৪ রান করতে পারলেই অবিশ্বাস্য ১০০ গড় নিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারতেন তিনি। কিন্তু মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই ইংলিশ লেগস্পিনার এরিক হলিস এর বলে শূন্য রানে আউট হয়ে যান তিনি। যার ফলে ১০০ গড়ের জাদুকরী মাইলফলকটি আর স্পর্শ করা হয়নি সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান এর। ব্রাডম্যান এর এই 'শূন্য' কে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে অলোচিত শূন্য রানের ইনিংস হিসেবে অভিহিত করা হয়।
★এজবাস্টনে শ্বাসরুদ্ধকর সমাপ্তিঃ
২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজের এজবাস্টন টেস্টের ঘটনা। চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাটিং এ নামে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেন শুরুটা ভালোই করেন। দলীয় ৪৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট এর পতন হয়। তারপরই শুরু হয় ইংলিশ পেসারদের তাণ্ডব। বিনা উইকেটে ৪৭ রান থেকে দেখতে দেখতে ১৩৭ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে অজিরা। ইংল্যান্ড এর জয় তখন মাত্র সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো। কিন্তু সেখান থেকে অজি পেসার ‘ব্রেট লি’ কে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন শেন ওয়ার্ন। জয় থেকে ৬২ রান দূরে থাকতে ব্যক্তিগত ৪২ রানে আউট হয়ে যান ওয়ার্ন। শেষ উইকেট জুটিতে ৬২ রান করা এক প্রকার অসম্ভব ই বলা চলে.. কিন্তু মাইকেল ক্যাসপ্রোভিজ আর ব্রেট লি মিলে অস্ট্রেলিয়াকে অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। কিন্তু ম্যাচের আসল নাটক তখনো বাকি ছিল। জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে ইংলিশ পেসার হার্মিসন এর বলে আউট হয়ে যান ক্যাসপ্রোভিজ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ২ রানে জিতে নেয় ইংল্যান্ড। এই টেস্টটিকে ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা টেস্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়।
২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজের এজবাস্টন টেস্টের ঘটনা। চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাটিং এ নামে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেন শুরুটা ভালোই করেন। দলীয় ৪৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট এর পতন হয়। তারপরই শুরু হয় ইংলিশ পেসারদের তাণ্ডব। বিনা উইকেটে ৪৭ রান থেকে দেখতে দেখতে ১৩৭ রানেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে অজিরা। ইংল্যান্ড এর জয় তখন মাত্র সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিলো। কিন্তু সেখান থেকে অজি পেসার ‘ব্রেট লি’ কে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন শেন ওয়ার্ন। জয় থেকে ৬২ রান দূরে থাকতে ব্যক্তিগত ৪২ রানে আউট হয়ে যান ওয়ার্ন। শেষ উইকেট জুটিতে ৬২ রান করা এক প্রকার অসম্ভব ই বলা চলে.. কিন্তু মাইকেল ক্যাসপ্রোভিজ আর ব্রেট লি মিলে অস্ট্রেলিয়াকে অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। কিন্তু ম্যাচের আসল নাটক তখনো বাকি ছিল। জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে ইংলিশ পেসার হার্মিসন এর বলে আউট হয়ে যান ক্যাসপ্রোভিজ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ২ রানে জিতে নেয় ইংল্যান্ড। এই টেস্টটিকে ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা টেস্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়।
★ দর্শকরা যখন গ্রাউন্ডসম্যানঃ
১৯৬৮ সালের ওভাল টেস্টের পঞ্চম দিনের ঘটনা। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করছিলো অস্ট্রেলিয়া। লাঞ্চ ব্রেকের আগেই ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েপরাজয়ের শঙ্কায় পরে অস্ট্রেলিয়া। ঠিক তখনি প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে মাঠের সম্পূর্ণ আউটফিল্ড প্রায় ডুবো ডুবো হয়ে যায় এবং মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে যায়। নিশ্চিত জয়টা এভাবে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি মাঠে উপস্থিত ইংলিশ দর্শকরা। তাই নিজেদের কাছে টাওয়েল, রুমাল, চাদর যা ছিল সব নিয়ে মাঠের পানি শুকানোর কাজে নেমে পরে। দর্শকদের নিরলস প্রচেষ্টায় মাঠ খেলার উপযোগী হয় এবং খেলা শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট এর পতনের মধ্য দিয়ে যখন ইংল্যান্ড এর জয় নিশ্চিত হয় তখন ম্যাচের মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল আর। এভাবেই জয় দিয়ে দর্শকদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতিদান দেয় ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিম।
১৯৬৮ সালের ওভাল টেস্টের পঞ্চম দিনের ঘটনা। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করছিলো অস্ট্রেলিয়া। লাঞ্চ ব্রেকের আগেই ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়েপরাজয়ের শঙ্কায় পরে অস্ট্রেলিয়া। ঠিক তখনি প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে মাঠের সম্পূর্ণ আউটফিল্ড প্রায় ডুবো ডুবো হয়ে যায় এবং মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে যায়। নিশ্চিত জয়টা এভাবে হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি মাঠে উপস্থিত ইংলিশ দর্শকরা। তাই নিজেদের কাছে টাওয়েল, রুমাল, চাদর যা ছিল সব নিয়ে মাঠের পানি শুকানোর কাজে নেমে পরে। দর্শকদের নিরলস প্রচেষ্টায় মাঠ খেলার উপযোগী হয় এবং খেলা শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট এর পতনের মধ্য দিয়ে যখন ইংল্যান্ড এর জয় নিশ্চিত হয় তখন ম্যাচের মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল আর। এভাবেই জয় দিয়ে দর্শকদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতিদান দেয় ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিম।
শত বছর আগে শুরু হওয়া ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজটি উত্তেজনা আর মর্যাদার দিক দিয়ে এখনো স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। দিন দিন এই সিরিজের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। আগামীতেও যে এই ঐতিহ্যের ধারা বজায় থাকবে,সেটি নিশ্চিতভাবে বলাই যায়। ছাইয়ের গল্প আর ইতিহাস বেঁচে থাকুক সকল ক্রিকেটপ্রেমীদের অন্তরে।
No comments